ঢাকা,সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪

‘শাপলা চত্বর ঘেরাও’ বিতর্কে হেফাজত

hefazotবাংলাট্রিবিউন:

দীর্ঘদিন পর আবারও আলোচনায় এলো কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। এবার সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে আন্দোলন করে কদিন ধরেই আলোচনায় উঠে এসেছে সংঠনটি। এরই মধ্যে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহীর বক্তব্য নিয়ে শুরু হয়েছে নতুন করে আলোচনা। অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে ‘মূর্তি’ অপসারণ না করলে আবারও রাজধানীর শাপলা চত্বর ঘেরাও করার ঘোষণা দেন তিনি। তবে তার এ বক্তব্য ব্যক্তিগত, সংগঠনের নয়— এমনটাই দাবি করছেন সংগঠনের মহাসচিব মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী।

গ্রিক দেবীর ভাস্কর্য অপসারণের দাবিতে ১০মার্চ সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে হেফাজতে ইসলাম। শুক্রবার জুমার নামাজের পর চট্টগ্রাম নগরের আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের সামনে চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। সেখানে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহী বলেন, ‘আজ ঘোষণা করতে চাই, সরকারের যদি ভুল না ভাঙে, অবিলম্বে সুপ্রিম কোর্ট চত্বর থেকে মূর্তিটি অপসারণ না করে, তাহলে সারাদেশ থেকে তৌহিদি জনতা আবারও আগামী ৫ মে ঢাকার শাপলা চত্বর ঘেরাও করবে। ঢাকা অবরোধ করা হবে। প্রয়োজনে লাগাতার হরতাল দেওয়া হবে।’ তার এই বক্তব্যসহ গণমাধ্যমেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় চট্টগ্রাম মহানগর হেফাজত।

হেফাজত সূত্রে জানা গেছে, মঈনুদ্দিন রুহীর বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ায় চাপের মধ্যে পড়ছেন সংগঠনটির নেতারা। হেফাজতের আমির কেন্দ্রীয় নেতাদের ‘ঢাকা ঘেরাও, শাপলা চত্বর ঘেরাও’— এ ধরনের বক্তব্য না দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। মঈনুদ্দিন রুহীকেও হেফাজত আমির ডেকে এ ধরনের বক্তব্য না দেওয়ার নির্দেশ দেন।

চট্টগ্রোমে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ সমাবেশ

তবে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করেও হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মঈনুদ্দিন রুহী সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

এ প্রসঙ্গে হেফাজতের আমিরের প্রেস সেক্রেটারি মাওলানা মুনির আহমেদ বলেন, ‘একটি সমাবেশ বা মিছিল হলে অনেক নেতা সেখানে উপস্থিত থাকেন। সেখানেই অনেকে অনেক রকম বক্তব্য দেন। এটি সাংগঠনিক কোনও সিদ্ধান্ত নয়।’

সংগঠনটির মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, ‘‘আমরা সরকারের কাছে ‘মূর্তি’ সরানোর দাবি জানাচ্ছি। এই মুহূর্তে হেফাজতের কোনও কর্মসূচি নেই। ঢাকা ঘেরাও বা শাপলা চত্বর ঘেরাও করার মতো কোনও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হয়নি। সরকারের পদক্ষেপ দেখে পরবর্তী সময়ে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’’

জানা গেছে, কর্মীদের মাঠে নামিয়ে আত্মগোপনে রয়েছেন হেফাজতের ঢাকার শীর্ষ নেতারা। তাদের বেশিরভাগের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি থাকায় কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েও মাঠে নামেননি তারা। শুক্রবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজ শেষে বেশকিছু লোক জড়ো হয়ে হেফাজতের নামে স্লোগান দেওয়া শুরু করেন। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ‘মূর্তি’ অপসারণের দাবিও তোলেন তারা। তবে তাদের বিক্ষোভ মিছিল করতে দেয়নি পুলিশ। পরে তাদের বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। হেফাজতে ইসলামের নামে স্লোগান দিতে দেখা গেলেও সেখানে হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন না।

পাঠকের মতামত: